বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী Bankim chandra chattopadhyay biography in bengali এই আর্টিকেলে আপনি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবনী সম্পর্কে জানতে পারবেন ( বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোটবেলা, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিবার, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষা, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কর্মজীবন,বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু ETC
বঙ্কিমচন্দ্র ছিলেন উনিশ শতকের বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ভারতের শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক ও কবি ও সাহিত্যিক বিদ| তিনি ভারতের জাতীয় সঙ্গীত বন্দে মাতরমের লেখক হিসেবে বিখ্যাত| বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ২৭শে জুন বাংলার ২৪ পরগনা জেলার কাঁটালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণ পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন।
Bankim chandra chattopadhyay biography in bengali Content
আরো পড়ুন – নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু Biography in Bengali
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয়
নাম | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
পিতা | যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
মাতা | দূর্গাদেবী চট্টোপাধ্যায় |
জন্মতারিখ | ২৬ শে জুন ১৮৩৮ |
জন্মস্থান | উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কাঁটালপাড়া |
কে ছিলেন | ঔপন্যাসিক, কবি ও সাহিত্যিক বিদ |
ছদ্মনাম | কমলাকান্ত |
বিদ্যালয় | হুগলি কলেজিয়েট স্কুল ( পরে সরকারি জেলা স্কুল) |
বিশ্ববিদ্যালয় | হুগলি মহসিন কলেজ এবং পরে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
ধর্ম | হিন্দু |
উল্লেখযোগ্য উপাধি | সাহিত্য সম্রাট |
মৃত্যু | ৮-ই এপ্রিল, ১৮৯৪ |
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম
বাংলা ভারতীয় অন্যতম সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাসিক কবি ও সাহিত্যিক বিদ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ২৬ শে জুন ১৮৩৮ সালে উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির কাঠাল পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন|বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন তার বাবা-মার তৃতীয় সন্তান| বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় পিতা-মাতা চার সন্তানের জন্ম দেন|চার সন্তান হলেন শ্যামাচরণ, সঞ্জীবচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র ও পূর্ণচন্দ্র|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোটবেলা
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ২৭শে জুন বাংলার ২৪ পরগনা জেলার কাঁটালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলায় ‘বঙ্কিমচন্দ্র’ শব্দের অর্থ ‘উজ্জ্বল পাক্ষিকের দ্বিতীয় দিনের চাঁদ’।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রাথমিক শিক্ষা মেদিনীপুরে হয়েছিল। তিনি একজন মেধাবী ছাত্র ছিলেন। মেদিনীপুরে প্রাথমিক শিক্ষার পর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় হুগলির মহসিন কলেজে যোগ দেন এবং সেখানে ছয় বছর অধ্যয়ন করেন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর পাঠ্যপুস্তক ছাড়াও অবসর সময়ে অন্যান্য বই পড়তেন।
বঙ্কিমচন্দ্রের পিতা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছিলেন সরকারি চাকরিতে। জন্মের পর তাকে মেদিনীপুরে ডেপুটি কালেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শিক্ষা
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় খুবই মেধাবী ছাত্র ছিলেন|তার পড়ার প্রতি আগ্রহ ছোটোবেলা থেকেই দেখা যায়| বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছোটবেলা উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির কাঠাল পাড়ার গ্রামে কয়েক বছর পড়ার পর তার বাবা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাথে মেদিনীপুরে চলে আসেন এবং মেদিনীপুরেই তিনি তার প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন|
মেদিনীপুরে কয়েকবছর ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা শুরু করেন ৫ বছর ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করার পর তিনি আবার তার গ্রামে ফিরে আসেন| গ্রামে ফিরে আসার পর তিনি আবার বাংলা ও সংস্কৃতি শিক্ষা নিতে শুরু করেন| এছাড়া সেই সময় তিনি পণ্ডিত হলধর তর্কচূড়ামণির কাছে নিয়মিত মহাভারত জ্ঞান লাভ করতে|
তার পর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৪৯ সালে হুগলী মহসিন কলজে ভর্তি হন এবং সেখানে ৮ বছর জন্য পড়াশোনা করেন। সেখানে তিনি জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় সর্বশেষ্ঠ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে আট টাকা পুরস্কার দেয়া হয়| এর সাথে সাথে কবিবর ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘সংবাদ সাধুরঞ্জনে’ গদ্য-পদ্য রচনা করতে শুরু করেন যার ফলশ্রুতি হিসেবে বঙ্কিমচন্দ্রের অনেক গুলি রচনা এই দুই কাগজে প্রকাশিত হয়ে যায়
এর পর ১৮৫৬ সালে তিনি আইন পড়ার জন্য কলকাতায় প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। তিনি ১৮৫৯ সালে বিএ পরীক্ষা দেন এবং গ্রাজুয়েট পাস করেন।
এরপর বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর পিতা যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো সরকারি চাকরিতে যোগদান করেছিলেন এবং ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টার পদে আসন গ্রহণ করেন|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কর্মজীবন
কলেজ শেষ করার পর বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় যশোর শহরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টরের পদে চাকরি করেন|এখানে কয়েক বছর কাজ করার পর ১৮৬০ সালে তিনি মেদিনীপুরের নেগুয়ায় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপুটি কালেক্টর হিসাবে উচ্চপদে যোগদান করেন|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ছোটবেলা থেকেই কবিতা রচনা লিখতে শুরু করেন এবং পরবর্তীকালে তিনি নিজে পত্রিকা সম্পাদনার কাজ শুরু করেন যার নাম ছিল ‘বঙ্গদর্শন’ যেখানে তিনি একে একে দর্শন, সাহিত্য, বিজ্ঞান, ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব ,সমাজতত্ত্ব, ভাষাতত্ত্ব, অর্থনীতি, ধর্ম প্রভৃতি বিষয়ে মূল্যবান প্রবন্ধ লিখতে থাকেন|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তেত্রিশ (23) বছর সরকারি চাকরি করার পর তিনি ১৪ ই সেপ্টেম্বর ১৮৯১ সালে চাকরি জীবন থেকে অবসরগ্রহণ করেন।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বিবাহ
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় খুবই অল্প বয়সে বিয়ে করেন তিনি 11 বছর বয়সে প্রথম বিয়ে করেন|তার স্ত্রী মোহিনী দেবী তখন তার বয়স ছিল মাত্র পাঁচ বছর| বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স মাত্র বাইশ, যখন তাঁর স্ত্রী মারা যান ১৮৫৯ সালে তার প্রথম স্ত্রী মারা যান। কিছুদিন পর আবার বিয়ে করেন। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী ছিলেন রাজলক্ষ্মী দেবী। তাদের তিন মেয়ে ছিল|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর সাহিত্যিক জীবন শুরু করেছিলেন শ্লোক লেখক হিসেবে। এরপর তিনি কথাসাহিত্যের দিকে ঝুঁকে পড়েন। দুর্গেশনন্দিনী, তাঁর প্রথম বাংলা রোম্যান্স, 1865 সালে প্রকাশিত হয়েছিল। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে
কপালকুণ্ডলা (1866),
মৃণালিনী (1869),
বিশ্ববৃক্ষ (1873),
চন্দ্রশেখর (1877),
রজনী (1877),
রাজসিংহ (1881),
দেবী চৌধুরানী (1881)
বঙ্কিমচন্দ্র চ্যাটার্জির সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস ছিল আনন্দ মঠ (1882)। আনন্দ মঠে “বন্দে মাতরম” গানটি ছিল যা পরবর্তীতে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়।
বঙ্কিম চট্টোপাধ্যায় একজন মহান গল্পকার ছিলেন এবং রোমান্সে পারদর্শী ছিলেন। চ্যাটার্জির মতো স্বতঃস্ফূর্ত ও সর্বজনীন জনপ্রিয়তা এর আগে বা পরে কোনো বাঙালি লেখক পারেনি। তাঁর উপন্যাস ভারতের প্রায় সব প্রধান ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রবন্ধ
লোক রহস্য (সমাজের উপর প্রবন্ধ, 1874, 1888 বর্ধিত)
বিজ্ঞান রহস্য (বিজ্ঞানের প্রবন্ধ, 1875)
বিচিত্রা প্রবন্ধ (বিভিন্ন প্রবন্ধ), খণ্ড 1 (1876) এবং 2 খণ্ড (1892)
সাম্য (সমতা, 1879)
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কল্পকাহিনী
- দুর্গেশনন্দিনী
- কপালকুণ্ডলা
- মৃণালিনী
- বিষবৃক্ষ
- ইন্দিরা
- যুগলঙ্গুরিয়া
- রাধারানী
- চন্দ্রশেখর
- কমলাকান্তের দপ্তর
- রজনী
- কৃষ্ণকান্তের উইল
- রাজসিংহ
- আনন্দমঠ
- দেবী চৌধুরানী
- কমলাকান্ত
- সীতারাম
- মুচিরাম গুরের জীবনচরিত
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যু
৮ ই এপ্রিল, ১৮৯৪ (২৬ শে চৈত্র ১৩০০ বঙ্গাব্দ) সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বহুমূত্র রোগে আক্রান্ত হয়ে যান। তবে তিনি বাংলা সাহিত্যের জগতে ছাপ ফেলে গিয়েছেন তার জন্য সমস্ত বাঙালির কাছে তিনি এখনও অবধি জীবিত আছে|
উপসংহার
আশাকরি আমাদের এই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বায়োগ্রাফি আপনাদের ভাল লেগেছে| বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শুধু নামেই নয় প্রকৃত অর্থেই তিনি বাংলা সাহিত্যের ‘সাহিত্য সম্রাট’ ছিলেন|
আমাদের এই ওয়েবসাইটে এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে খুবই ধন্যবাদ যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানাবেন|
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের FAQ
বন্দে মাতরম কে লিখেছেন?
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কী রচনা করেছিলেন?
তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসগুলির মধ্যে রয়েছে কপালকুণ্ডলা, মৃণালিনী, বিশ্ববৃক্ষ, চন্দ্রশেখর, রজনী, রাজসিমা, এবং দেবী চৌধুরানী।
বঙ্কিমচন্দ্রের বাবার নাম কি
যাদবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বঙ্কিমচন্দ্রের মায়ের নাম কি
দূর্গাদেবী চট্টোপাধ্যায়
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কবে মারা যান
৮-ই এপ্রিল, ১৮৯৪
1 thought on “বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় Biography in bengali”